অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান আর নেই। তিনি আজ শনিবার সকাল ৮টায় নিজ বাসায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। এ টি এম শামসুজ্জামান স্ত্রী, তিন মেয়ে ও দুই ছেলে রেখে গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
বেশ কয়েক বছর ধরে নানান শারীরিক সমস্যায় ছিলেন এ টি এম শামসুজ্জামান। ২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল রাতেও বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সেদিন তাঁর খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। সে রাতে তাঁকে রাজধানীর গেন্ডারিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ টি এম শামসুজ্জামানের অন্ত্রে প্যাঁচ লেগেছিল। সেখান থেকে আন্ত্রিক প্রতিবন্ধকতা। এতে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। তাঁর দেহে অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর কিছু শারীরিক জটিলতা হয়।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সর্বশেষ আবারও এ টি এম শামসুজ্জামানকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকের তৃতীয় তলায় তাঁর চিকিৎসাসেবা চলে। দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর আগে চিকিৎসা শেষে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় এ অভিনেতাকে।
অভিনেতার মেয়ে কোয়েল আহমেদ সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘শুক্রবার বিকালে আব্বাকে বাসায় নিয়ে আসছিলাম। উনি হাসপাতালে থাকতে চাইছিলেন না। তাই বাসায় নিয়ে আসছিলাম। সকালে দেখি আব্বা নাই।’
গত বুধবার বিকালে তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসকেরা প্রথম দিকে ধারণা করেছিলেন, এ টি এম শামসুজ্জামান করোনায় আক্রান্ত। পরীক্ষার জন্য নমুনা নেওয়া হয়। ফলাফলে জানা যায় করোনা নেগেটিভ। পরদিন এই অভিনেতার স্ত্রী রুনি জামান জানান, হাসপাতালে ভর্তির পর থেকেই তারা চিন্তিত। কারণ, এ অভিনেতার বয়স হয়েছে। শরীরও দুর্বল। তা ছাড়া গত কয়েক বছরে একাধিক অস্ত্রোপচার হয়েছে তার শরীরে। সব রিপোর্টের ফল ভালো পেয়ে কিছুটা চিন্তামুক্ত সবাই। এরপরই বাসায় ফেরেন এটিএম শামসুজ্জামান।
এ টি এম শামসুজ্জামান বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা, পরিচালক, কাহিনিকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপ লেখক ও গল্পকার। অভিনয়ের জন্য বেশ কয়েকবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন একুশে পদক।
১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন এ টি এম শামসুজ্জামান। গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার ভোলাকোটের বড়বাড়ি আর ঢাকায় থাকতেন দেবেন্দ্র নাথ দাস লেনে। পড়াশোনা করেছেন ঢাকার পোগোজ স্কুল, কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহীর লোকনাথ হাইস্কুলে। তাঁর বাবা নূরুজ্জামান ছিলেন নামকরা উকিল এবং শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের সঙ্গে রাজনীতি করতেন।
পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে শামসুজ্জামান ছিলেন সবার বড়। এ টি এম শামসুজ্জামানের চলচ্চিত্রজীবনের শুরু ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে। প্রথম কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছেন ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রের জন্য।
এ পর্যন্ত শতাধিক চিত্রনাট্য ও কাহিনি লিখেছেন। প্রথম দিকে কৌতুকাভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রজীবন শুরু করেন তিনি। অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র পর্দায় আগমন ১৯৬৫ সালের দিকে। ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন তিনি। ১৯৮৭ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘দায়ী কে?’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘চোরাবালি’ ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে পার্শ্বচরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মাননা অর্জন করেন।
Source: www.prothomalo.com
প্রধান পত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান শিরোনাম দেখতে এখানে ক্লিক করুন
সব পত্রিকা এক জায়গায় দেখতে এখানে ক্লিক করুন
Bangladesh Yellow Page.Get All Bangladesh Information.Click Here
করোনা ভাইরাস - লাইভ আপডেট
# | দেশ | আক্রান্ত | মৃত | সুস্থ |
---|