আবুল কাসেম বাস চালাতেন রাজশাহী থেকে কিশোরগঞ্জ রোডে। সেখান থেকে যা আয় হতো, তা দিয়ে বাসাভাড়াসহ সংসার মোটামুটি ভালোভাবে চলে যেত। করোনাভাইরা পরিস্থিতির কারণে সেই আয় বন্ধ হয়ে গেছে। এখন কর্মজীবী কাসেম কর্মহীন হয়ে বাসায় বসে আছেন।
চার সদস্যের পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন আবুল কাসেম। তিনি বলেন, কখনো এভাবে কর্মহীন ছিলেন না। কারও কাছে হাতও পাতেননি। এখন লজ্জা থাকলেও পেটের দায়ে তাঁকে হাত পাততে হচ্ছে। তবু মিলছে না ত্রাণ। কাসেমের মতো রাজশাহীর কয়েক হাজার পরিবহনশ্রমিক কাজ না থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
আজ রোববার রাজশাহী এ এইচ এম কামারুজ্জামান বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, বাসগুলো সারি সারি করে টার্মিনালে রাখা। টার্মিনাল জনশূন্য প্রায়। দু–একজনকে দেখা গেল গাড়ির কাছে। তাঁদের একজন রাজশাহী–গোদাগাড়ী রাস্তার বাসের চালকের সহকারী রুবেল। তিনি ভাড়া বাসায় থাকেন নগরের শিরোইল এলাকায়। জানালেন, বাসা এখানে থাকায় প্রতিদিন তিনি এখানে আসেন। যদি কেউ কোনো ত্রাণ-সাহায্য দেন।
নগরের একই এলাকার বাসিন্দা মো. মাসুম বাস চালান রাজশাহী থেকে ঢাকায়। বৃদ্ধ মা-বাবা নিয়ে তাঁর পরিবার। তিনিই সংসার চালান। পরিবহন বন্ধ থাকায় তিনি অসহায় জীবন চালাচ্ছেন। মাসুম বলেন, ‘১৫ দিন ধরে বাস চালাই না। চার দিন আগে বাসের মালিক ফোন দিয়ে ৫০০ টাকা ধরিয়ে দিয়েছেন। এই ৫০০ টাকায় কদ্দিন চলে, ভাই?’
নগরের শালবাগান এলাকার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সজল রাজশাহী থেকে তানোর উপজেলায় বাস চালান। তিনি এখনো কোনো ত্রাণ পাননি। তাঁর বাসমালিক কিছু টাকা ও চাল কিনে দিয়েছেন। সজলের দেখা পাওয়া গেল গতকাল শিরোইল বাস টার্মিনালে। তিনি বলেন, ‘নিজের কর্মস্থলে আসি। এসে বসে থেকে চলে যাই, যদি কেউ কিছু সাহায্য করে।’
এর আগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ২০ মার্চ রাজশাহী থেকে সারা দেশে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় রাজশাহীর পরিবহন সংগঠনগুলো। তখন শুধু রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বাস চলাচল করছিল। পরে সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে সারা দেশে বাসসহ সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়। পরে এই নির্দেশ সরকার ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করে। পরে এই ছুটি আরও বাড়িয়ে ২৫ এপ্রিল করা হয়।
রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরী বলেন, তাঁরা খুবই বিপদে রয়েছেন। তাঁদের ২ হাজার ৪০০ শ্রমিক রয়েছেন। অনেক দিন ধরে যান চলাচল বন্ধ থাকায় অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাঁরা সংগঠন থেকে প্রাথমিকভাবে গত শুক্রবার থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৫ কেজি চাল ও আড়াই কেজি আলু দেওয়া শুরু করেছেন। পর্যায়ক্রমে সবার কাছে পৌঁছে যাবে।
মাহাতাব হোসেন চৌধুরী আরও বলেন, তাঁরা এখনো সরকারি কোনো সাহায্য পাননি।
Source: prothomalo.com
প্রধান পত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান শিরোনাম দেখতে এখানে ক্লিক করুন
সব পত্রিকা এক জায়গায় দেখতে এখানে ক্লিক করুন
Bangladesh Yellow Page.Get All Bangladesh Information.Click Here
করোনা ভাইরাস - লাইভ আপডেট
# | দেশ | আক্রান্ত | মৃত | সুস্থ |
---|